খুলনা কেএমপির অভিযানে ভূয়া এন এস আই কর্মকর্তা গ্রেপ্তার

 প্রকাশ: ০২ মার্চ ২০২৪, ০৪:৪৪ অপরাহ্ন   |   আইন-আদালত-অপরাধ

খুলনা কেএমপির অভিযানে ভূয়া এন এস আই কর্মকর্তা গ্রেপ্তার


খুলনা প্রতিনিধিঃ

খুলনা  কেএমপির  অভিযানে ঝালকাঠি হতে ১ জনকে গ্ৰেফতার করা হয়েছে। গ্ৰেফতারকৃত হচ্ছে ঝালকাঠি জেলার কাঠালিয়া থানাধীন বিল ছোনাওঠা গ্ৰামের দিরেন বড়ালের পুত্র বিপ্লব বড়াল (৩২)।

কেএমপি সুত্র জানায়, বাদী দূর্বা দাশের এজাহারের ভিত্তিতে আসামী বিপ্লব বড়াল  সহ ঝালকাঠি জেলার অজ্ঞাতনামা ৩/৪ জন আসামীর বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়। সেই সুত্র ধরে গত ০১ মার্চ ২০২৪  ঝালকাঠি জেলার কাঠালিয়া থানার বিল ছোনাওঠা এলাকা হতে আসামিকে গ্রেফতার করা হয়।


আসামী বিপ্লব বড়াল একজন প্রতারক এবং সে নিজেকে এনএসআই,ডিজিএফআই,পুলিশ কর্মকর্তা, বিসিএস কর্মকর্তার পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন মেয়েদের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তাদের সাথে অনৈতিক কাজ করে অনৈতিক ছবি ও ভিডিও মোবাইলে ধারণ করে। উক্ত কুরুচিপূর্ণ ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া ভয় দেখিয়ে অবৈধ শারিরীক সম্পর্ক স্থাপনসহ তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ স্বর্ণ ও নগদ অর্থ আত্মসাত করাই তার মূল পেশা। আসামী বিপ্লব বড়াল ব্যক্তি জীবনে অবিবাহিত। তার কোন রাজনৈতিক পরিচয় নাই। আসামীর পিতা একজন দিনমজুর এবং তার পরিবার একটি কুঁড়েঘরে বসবাস করে। আসামী বিপ্লব বড়াল ঝালকাঠি জেলার কাঁঠালিয়া থানাধীন বিল ছোনাওঠা এলাকায় তার নিজ গ্রামে বড় হয়েছে। আসামী বিপ্লব বড়ালের বিরুদ্ধে ০২ টি মামলা রয়েছে এবং তার বড় ভাই মনা বড়াল একজন পেশাদার ডাকাত তার বিরুদ্ধে কাঁঠালিয়া থানাসহ বিভিন্ন থানায় ০৪ টি মামলা রয়েছে। তারা দুই ভাই আন্তঃ জেলা ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য।


উল্লেখ্য যে, অনুমান ছয় মাস পূর্বে আসামী বিপ্লব বড়ালের সাথে বাদীর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পরিচয় হয়। একপর্যায়ে আসামী বিপ্লব বড়ালের সাথে বাদীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। আসামী বিপ্লব বড়াল মামলার সাক্ষী সহ বাদীর পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের নিকট বাদীকে বিবাহের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বাদীর সাথে খুলনা শহরের বিভিন্ন স্থানে দেখা করে। পরবর্তীতে আসামী বিপ্লব বড়ালকে বিবাহের কথা বললে বাদীকে সহ বাদীর পরিবারের অন্যান্য সদস্যদেরকে জীবনের তরে শেষ করে ফেলবে। সে আরো বলে টাকা এবং স্বর্ণালংকার চাইলে বাদীকে মিথ্যা মামলায় ফাসাইয়া দিব। এক পর্যায়ে বাদী বিভিন্ন স্থানে খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারেন যে, আসামী জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা(এনএসআই) এর কোন কর্মকর্তা নয়, সে একজন প্রতারক। এনএসআই এর ভূয়া কার্ড প্রদর্শন করে বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গদের নিকট হতে বিভিন্ন সময় সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে চাকুরি দেওয়ার কথা বলে সু-কৌশলে অজ্ঞাতনামা ৩/৪ জন আসামীর সহযোগিতায় অর্থ আত্মসাত করেছে মর্মে জানা যায়।


আসামী নিজেকে জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা (এনএসআই) এর কর্মকর্তা পরিচয় দেওয়াসহ এনআইএস এর কার্ড প্রদর্শন করে বর্তমানে খুলনায় কর্মরত আছে বলে জানায়। পরবর্তীতে আসামী বাদীকে বিবাহের প্রলোভন দেখিয়ে প্রায় সময় ব্যক্তিগত প্রয়োজনে বাদীর নিকট আর্থিক সাহায্য চায়। তারই প্ররোচনায় গত ২০/১০/২০২৩ তারিখ দুপুর অনুমান ১২.০০ ঘটিকার সময় খুলনা সদর থানাধীন হেলাতলা স্বর্ণপট্টি বাংলাদেশ বেকারী নামক দোকানের সামনে পাঁকা রাস্তার উপর হতে আসামী বিপ্লব বড়াল অজ্ঞাতনামা আসামীদের সহযোগিতায় নিজেকে সরকারি বড় কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে বাদী দূর্বা দাশের সাথে অপরাধ মূলক বিশ্বাসভঙ্গ করে বাদীর নিকট হতে নগদ ১,০০,০০০/-(এক লক্ষ) টাকা, ০৫(পাঁচ) ভরি স্বর্ণালংকার যার মূল্য অনুমান ৫,০০,০০০/-(পাঁচ লক্ষ) টাকা সহ মোট ৬,০০,০০০/-(ছয় লক্ষ) টাকা, জনৈক জয়ন্ত ফকির এর সাথে অপরাধ মূলক বিশ্বাসভঙ্গ করে বাদীর নিকট হতে নগদ ৭,৪১,০০০/-(সাত লক্ষ একচল্লিশ হাজার) টাকা  এবং দেবাশীষ রায় এর সাথে অপরাধ মূলক বিশ্বাসভঙ্গ করে বাদীর নিকট হতে নগদ ৫০,০০০/-(পঞ্চাশ হাজার) টাকা, সর্বমোট ১৩,৯১,০০০/-(তের লক্ষ একানব্বই হাজার) টাকা আত্মসাৎ করেছে।


ধৃত আসামী বিপ্লব বড়ালকে যথানিয়মে রিমান্ডের আবেদনসহ বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। অত্র মামলাটি বর্তমানে তদন্তাধীন আছে এবং অন্যান্য আসামী গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।


আইন-আদালত-অপরাধ এর আরও খবর: